,

১২ দিন অতিবাহিত হলেও মূল আসামীরা ধরা ছোয়া বাহিরে নবীগঞ্জে চাঞ্চল্যকর বেলাল হত্যা মামলাউন্নত সিকিৎসার জন্য বড় ভাই হেলালের অপর চোখ রক্ষায় এখন বড় অংকের টাকা প্রয়োজন।

এম.এ আহমদ আজাদ ॥ নবীগঞ্জে চাঞ্চল্যকর সিএনজি শ্রমিক বেলাল মিয়া হত্যাকান্ডে ১২ দিন অতিবাহিত হলেও মূল আসামীরা ধরাছোয়ার বাহিরে রয়েছে। পুলিশ আফছর মিয়া ব্যতিত অন্য কোন আসামীকে গ্রেফতার করতে পারেনি। ফলে বাদীসহ বেলালের আত্মীয় স্বজনের মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে। পুলিশ হন্যে হয়ে খুঁজছে কিন্তু আসামীদের সবাই এলাকা ছেড়ে আত্মগোপন করেছে। পুলিশের দাবী আসামীদের গ্রেফতারে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বাহুবল ও নবীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করেও কাউকে পাওয়া যায়নি। গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। এদিকে সন্ত্রাসীদের হাতে ছোট ছেলে বেলাল খুন, অপর আহত বড় ছেলে হেলাল মিয়ার চোঁখ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় পিতা ফারুক মিয়া চরম শোকাহতভাবে জীবন যাপন করছেন। গতকাল শুক্রবার ডাক্তাররা জানিয়েছেন হেলাল মিয়ার চোঁখ নষ্ট হয়ে যাবার ফলে তার অপর চোখ বাঁচাতে হলে তাকে ঢাকায় প্রেরন করা হবে। উচ্চপর্যায়ে উন্নত সিকিৎসার জন্য হেলালের এখন বড় অংকের টাকা প্রয়োজন। পত্রিকার হকার ফারুক মিয়া তার ছেলের চিকিৎসার জন্য সমাজের ভিত্তমানদের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন। উল্লেখ্য, গত ২৬ এপ্রিল বিকালে শহরের শেরপুর রোডস্থ মা-হোটেলের ও মাইওয়ান ব্যবসা প্রতিষ্টানের সামনে দাড়ানো অবস্থায় প্রতিপক্ষ ছাত্রদল নেতা রায়েছ চৌধুরী ও সামছু মিয়া’র নেতৃত্বে একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী সিএনজি শ্রমিক বেলাল মিয়া কে কুপিঁয়ে রক্তাক্ত জখম করে। মূমুর্ষ অবস্থায় তাকে প্রথমে নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে প্রচুর রক্তকরণ হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে দ্রুত সিলেট নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। পরে স্বজনরা সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে বেলাল মিয়ার মৃত্যু ঘটে। নিহত বেলাল মিয়া পৌর শহরের নোয়াপাড়া গ্রামের সাবেক পত্রিকার হকার ও সিএনজি ম্যানাজার ফারুক মিয়ার ছেলে এবং পত্রিকার এজেন্ট মোশাহিদ আলী ও মিয়াধন মিয়ার ভাতিজা। ঘাতকদের গ্রেফতার ও ফাঁিসর দাবীতে সিএনজি শ্রমিক ইউনিয়ন কপিন নিয়ে শহরে মৌন মিছিল ও শোক র‌্যালী বের করে। ২৭ এপ্রিল সোমবার বিকালে জানাযার নামাজ শেষে তাকে নোয়াপাড়াস্থ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের পিতা ফারুক মিয়া গত ২৮ এপ্রিল রাতে ২৮ জনের নাম উল্লেখ্য করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৭/৮ জনকে আসামী করে নবীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা নং ৪১ তাং ২৮/০৪/২০১৫ইং দায়ের করেন। উক্ত মামলার আসামীরা দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে চলে যায়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস.আই নজরুল ইসলাম আসামীদের গ্রেফতারে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়েও গ্রেফতার করতে পারেন নি। গত ১লা মে ভোর রাত ৪ টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশের সহযোগিতায় একদল পুলিশ শ্রীমঙ্গল সদরের রূপসীপুর এলাকাস্থ বোনের বাসায় অভিযান চালিয়ে অন্যতম আসামী আফছর উদ্দিনকে গ্রেফতার করে নবীগঞ্জ থানায় নিয়ে আসে। এরপর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়েও কাউকে না পেয়ে আর কোন আসামী গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এদিকে বেলাল হত্যাকান্ডের আগের দিন সংঘর্ষে গুরুতর আহত নিহত বেলালের বড় ভাই হেলাল এর একটি চোখ নষ্ট হওয়ার পথে। বর্তমানে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নিয়ে যাওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ডাক্তার। নিহত বেলালের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে বেলালের মা বার বার মুর্চা যাচ্ছেন। সদ্য বিবাহিত বিধবা স্ত্রী’র আহাজারিতে এলাকার বাতাস ভাড়ি হয়ে উঠছে। শোর্কাত পরিবারের লোকজন অনতিবিলম্বে খুনিদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্থি দাবী করেছেন। আসামীদের গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা এস.আই নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, আসামীদের অবস্থান সম্পর্কে তথ্য পাওয়ার সাথে সাথেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।


     এই বিভাগের আরো খবর